এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাসুদ রানা ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন “শিক্ষার ওপর এরূপ আক্রমণের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই কর আরোপের ফলে বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেশি ফি দিতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন, অনেক শিক্ষার্থীর পরিবার আর্থিক সংকটে রয়েছে। এ অবস্থায় বর্ধিত ফি এর বোঝা বহন করা শিক্ষার্থীদের পক্ষে অসম্ভব। আমরা এর আগেও দেখেছি, সরকার ২০১০ ও ২০১৫ সালে বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি এর ওপর কর আরোপ করেছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পরবর্তীতে তা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। তাই আন্দোলনের ভয়ে সরকার এবার টিউশন ফি এর ওপর সরাসরি কর আরোপ না করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভূত আয়ের ওপর কর আরোপের প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হল, এ সব প্রতিষ্ঠানের আয়ের ওপর কর আরোপ করলে মালিকপক্ষ তা ফি বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই আদায় করবে।”
তাঁরা আরো বলেন
“সরকার এক দিকে বলছে, ১৯৯২ এর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, ‘যা শুধুমাত্র শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যেই প্রতিষ্ঠিত। আবার এর ওপর বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মতই করারোপ করছে। যা সরকারের দ্বিমুখী নীতির পরিচায়ক রাষ্ট্রের কর্তব্য বিনামূল্যে সবার জন্য একমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা করা। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও তা পরিচালনা করা। কিন্তু আমরা দেখছি, সরকার সে দায়িত্ব অস্বীকার করায় গড়ে উঠেছে বহু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এবং সেখানে ছাত্রদের টাকার বিনিময়ে পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। সেটা ছাত্রদের জন্য নিঃসন্দেহে কষ্টকর। কিন্তু এই করারোপের ফলে শিক্ষাব্যয় নতুন করে বাড়লে বহুশিক্ষার্থী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও আর পড়তে পারবে না। একদিকে রাষ্ট্র দিন দিন ফি বৃদ্ধি করে সমাজের নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের শিক্ষা থেকে দূরে রাখতে চাইছে। আবার একই সাথে আন্দোলন রোধ করার জন্য ভিন্ন নামে এই কর আরোপের কাজ করছে। ”
পরিশেষে নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি কর প্রত্যাহারের দাবি জানান। সরকার দাবি মানতে সম্মত না হলে, শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে তা মানতে বাধ্য করা হবে বলে- হুশিয়ারি দেন।
Leave a Reply