শিমু দেখার প্রচন্ড ইচ্ছা আছে নানান কারণেই। বগুড়ায় কোন হলে শিমু চললে ফ্যামিলিসহ দেখে ফেলতাম। এখন শেষমেশ প্রার্থনা করছি যাতে ওটিটি তে আসে সিনেমাটা। তাহলে দেখতে পারব। স্টোরি সম্পর্কে যতোদূর ধারণা পেয়েছি তাতে এই সিনেমাটা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা প্রচুর হওয়ার কথা কিন্তু আমি আলোচনা পাচ্ছিনা। সমস্যাটা কোথায় তাও বুঝতে পারছিনা; আলোচনা হচ্ছে কিন্তু আমিই পাচ্ছিনা নাকি আলোচনাই হচ্ছেনা?
হলিউড, বলিউডের বেশিরভাগ সিনেমার নিজস্ব প্রোপাগান্ডা থাকে- বাংলাদেশেও আমরা দহন দেখেছি, ভারতে কাশ্মির ফাইলস এখন বেশ আলোচনা-সমালোচনার তুঙ্গে আছে। এরকম প্রায় প্রত্যেক সিনেমাই মানুষের মনোজগতে- রাজনৈতিক চিন্তায় প্রভাব ফেলে। আমি বারবার মর্ডান টাইমসের কথা বলি বন্ধুদের। চার্লি চ্যাপলিনের সিনেমা অনেকের কাছে হাসির খোরাক হলেও এর গভীরতা ব্যপক- শিল্পবিপ্লবের পর বেকারত্ব সমস্যা, ধনী-গরিব বৈষম্য, মানুষের যান্ত্রিক হয়ে যাওয়া- এসব করুণদৃশ্য আমরা পাই চার্লি চ্যাপলিনের সিনেমায়- আমরা আমাদের দেশেও পেয়েছিলাম জহির রায়হানকে- তাকে হারানোর পর আমরা ধীরে ধীরে সিনেমা হারিয়েছি।
‘শিমু’ খুব সংবেদনশীল একটা সাবজেক্টের উপর নির্মিত। দেশে অর্থনৈতিক-সামাজিক-রাজনৈতিকভাবে নিপীড়িত গার্মেন্ট শ্রমিকের গল্প। সেই গল্প নির্মাণ করতে যাওয়াটা সাহসের কাজ। ‘শিমু’ দেখার সুযোগ না হওয়ায় আমি এখন অবধি জানিনা এর ভাষাটা কি- আমি জানিনা শিমু ঠিক কোন অংশের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব করে.
একপক্ষ বাহবা দিলে অন্য পক্ষের নিন্দা করার কথা। দেখার সুযোগ না পেয়ে আমি সেই বাহবা কিংবা নিন্দা পড়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাও কোথাও ভালমতো পাচ্ছিনা- কেউ রাজনৈতিক চোখে ‘শিমু’ দেখে থাকলে জানাবেন, লিখবেন। বাহবা-নিন্দা যাই হোক জানাবেন- ভিন্নরকমের গল্প নিয়ে সিনেমা হচ্ছে এইটা তো আশার ব্যপার। বাংলা সিনেমায় চৌধুরী সাহেবকে দো-তলা থেকে নামতে দেখে দেখে ক্লান্ত। গুন্ডা-মাস্তান মারতে মারতেও ক্লান্ত সেই ক্লান্তিতে একটু স্বস্তি দেওয়ার মতো কাজ হচ্ছে সেইটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা ব্যাপকভাবে হলে সকলেরই মঙ্গল।
রুচির দূর্ভিক্ষ নিয়ে যারা আলাপ দেই তাদেরও উচিৎ রুচি বদলানোর মতো কাজ হলে সেটাকে একটিভিটিজম আকারে নেওয়া। তা হোক শাটিকাপ, হোক লাইট-ক্যামেরা-অবজেকশন, লাল মোরগের ঝুঁটি কিংবা শিমু। ঢাকার বাইরে আমরা যারা থাকি তারা অন্তত আপনাদের লেখাজোঁখা, রিভিউ কিংবা আলাপ দেখে অন্তত কিছুটা আড্ডা কিংবা তর্কের সরঞ্জাম পাই।
লেখকঃ
জাফর মুহাম্মদ
Leave a Reply